থিকেনিং
এজেন্টঃ-
টেক্সটাইল
প্রিন্টিং এ থিকেনিং এজেন্ট বা প্রিন্টিং গাম এর গুরুত্ব অপরিসীম।
কেননা ডাইষ্টাফ বা পিগমেন্ট ফেব্রিকে লাগাতে হলে থিকেনিং এজেন্টের ব্যবহার একান্ত প্রয়োজন । ফেব্রিক প্রিন্টের নির্দিষ্ট জায়গায় থিকেনিং এজেন্টের সাথে রং বা পিগমেন্ট লেগে থাকে এবং এতে রং ফেব্রিকের প্রিন্ট বহির্ভুত জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে না । তাছাড়া থিকেনিং এজেন্টের ব্যবহারের ফলে রং স্থায়ী করার জন্য ষ্টীমিং বা ফিক্সেশন এর সময়ে কোন প্রকার কালার ব্লিডিং হয় না।
ফেব্রিক প্রিন্টের পরে ফেব্রিক ভাল্ভাবে পরিষ্কার পানি দ্বারা ধুয়ে এই থিকেনিং এজেন্ট সম্পূর্ণ রুপে দূর করা হয়।তবে থিকেনিং এজেন্ট এমন হতে হবে যাতে রং বা প্রিন্টিং পেষ্ট এ ব্যবহৃত অন্যান্য উপকরন গুলোর সাথে মিক্সিং এ কোন রকম অসুবিধার সৃষ্টি না করে।
টেক্সটাইলে
ব্যবহৃত থিকেনিং
এজেন্টঃ-
টেক্সটাইলে
বিভিন্ন ধরনের থিকেনিং এজেন্ট ব্যবহার করা হয়।
এদের মধ্যে অন্যতম হলোঃ
১.সোডিয়াম
এলাজিনেট
২.গাম
এরাবিক
৩.গাম
সেনেগাল
৪.গাম
ট্রেগাকান্থ
৫.গোয়ারগাম
৬.গাম
কারায়া
৭.লোকাষ্ট
বীন গাম
৮.ষ্টার্চ ইত্যাদি
টেক্সটাইল প্রিন্টিং
এ থিকেনিং
এজেন্টের গুরুত্ব
ও প্রয়োজনীয়তাঃ-
টেক্সটাইল প্রিন্টিং এ নিম্নলিখিত কারনে থিকেনিং এজেন্ট ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
১.টেক্সটাইল
প্রিন্টিং এ বিভিন্ন প্রকারের রং একই সাথে পাশাপাশি প্রিন্ট করার জন্য থিকেনিং এজেন্ট ব্যবহৃত হয়ে থাকে। সেই জন্য রং এর দ্রবণ আঠালো করার জন্য থিকেনিং এজেন্ট একান্ত প্রয়োজন।
২.থিকেনিং
এজেন্ট প্রিন্টিং এ ব্যবহৃত রং ফেব্রিকে ঢুকতে বাঁধার সৃষ্টি করে না এবং পরবর্তীতে রং ফিক্সেশন এর সময়ে কোন রুপ ক্ষতি করে না।
৩.প্রিন্ট
পেষ্ট এ ব্যবহৃত বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্যাদি এবং অক্সিলারিজ এর সাথে থিকেনিং এজেন্ট কোন রুপ বিক্রিয়া করে না।
থিকেনিং এজেন্ট
নির্বাচনঃ-
ফেব্রিক
প্রিন্টের জন্য থিকেনিং এজেন্ট দ্বারা প্রিন্ট পেষ্ট তৈরি করা হয়। ফেব্রিক প্রিন্টের পুর্বে আপনাকে জেনে নিতে হবে কোন ফেব্রিকের জন্য কি ধরনের প্রিন্ট পেষ্ট ব্যবহার করতে এবং কোন প্রিন্ট পেষ্ট এর জন্য কি ধরনের থিকেনিং এজেন্ট ব্যবহার করতে হবে।
বর্তমানে
মার্কেটে যে ধরনের থিকেনিং
এজেন্ট পাওয়া যায় তাদের ব্যবহার পদ্ধতি খুব সহজ।এই সকল থিকেনিং এজেন্ট গুলো সাধারণত ২৪ ঘন্টা ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হয়।২৪ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখার পর থিকেনিং এজেন্ট গুলো ফুলে উঠলে গরম পানিতে বড় পাত্রে সিদ্ধ করতে হয় এবং সিদ্ধ করার সময় কাঠি দিয়ে অনবরত নাড়তে হয়। পাউডার হিসেবে যে সকল গাম পাওয়া যায় যেমন – লোকাষ্ট বীন গাম এবং ষ্টার্চ বার্লি জাতীয় গাম গুলো সাধারণত একবার সিদ্ধ ও একবার ঠান্ডা করে আঠালো পেষ্ট তৈরি করা হয়।
এ
ছাড়া টেক্সটাইল প্রিন্টিং এর জন্য ব্যবহৃত প্রিন্ট পেষ্ট তৈরি করার সময় থিকেনিং এজেন্টের সাথে অন্যান্য রাসায়নিক দ্রব্যাদিও ব্যবহার করা হয়।ফেব্রিকে রং স্থায়ী করার জন্য ফিক্সিং এজেন্ট এ সময় ব্যবহার করা হয়।সব ধরনের ফেব্রিকে সব ধরনের থিকেনিং এজেন্ট ব্যবহার করা যায় না।ভাল প্রিন্টিং এর জন্য ফেব্রিকের ধরন অনুযায়ী থিকেনিং এজেন্ট ব্যবহার করতে হয়।একই থিকেনিং এজেন্ট সব ধরনের ফেব্রিক প্রিন্ট করার জন্য প্রযোজ্য নয়।সেই জন্য ইউনিভার্সাল থিকেনিং এজেন্ট বলে কিছু নেই।ভাল প্রিন্ট করার জন্য একজন প্রিন্টারকে নিম্নলিখিত বিষয় গুলো জেনে রাখতে হয়ঃ-
১.মোটা
কটন ফেব্রিকের জন্য ষ্টার্চ থিকেনিং এজেন্ট করা যায়।
২.মসৃণ
প্রিন্টিং এর জন্য সাধারণত ষ্টার্চ ব্যবহার করা হয় না।
৩.ষ্টার্চ
থিকেনিং এজেন্ট রং এর উজ্জ্বলতা অটুট রাখে।
৪.গাম
ট্রেগাকান্থ অতি সহজে ধুয়ে পরিষ্কার করা যায়।
৫.গাম
ট্রেগাকান্থ ব্যবহার করলে রং অতি সহজেই ফেব্রিকে ঢুকতে পারে কিন্তু প্রিন্ট সুন্দর হয় না।
৬.ভারী
ধরনের প্রিন্টিং এর জন্য গাম এরাবিক ব্যবহার করা হয় না।
সাধারণত মসৃন প্রিন্টের জন্য গাম সেনেগাল এবং গাম এরাবিক ব্যবহার করা হয়।
কেননা এগুলি অতি সহজে ধুয়ে পরিষ্কার করা যায়।
৭.কোন
ফেব্রিকে উজ্জ্বল প্রিন্ট পেতে হলে ব্রিটিশ গাম ব্যবহার করা উত্তম।
৮.ষ্টার্চ
পেষ্ট এ এসিড ব্যবহার করা যায় না।
৯.লোকাষ্ট
বীন গামে এলকালি ব্যবহার করা যায় না।
১০.থিকেনিং
এজেন্ট এর মুল্য ইহার ব্যবহারের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে থাকে।
থিকেনিং এজেন্ট
নির্বাচনের জন্য
নিম্নলিখিত বিষয়ের
প্রতি খেয়াল
রাখা আবশ্যকঃ-
১.ব্যবহৃত
প্রিন্টিং মেশিনের টাইপ বা ধরন(রোলার বা স্কীন) ।
২.ব্যবহৃত
রং এর রাসায়নিক গুনাবলি।
৩.প্রিন্টিং
এর ষ্টাইল (ডাইরেক্ট,রেজিষ্ট, ডিজচার্জ ইত্যাদি)।
৪.ফেব্রিকের
রং ফিক্সেশন পদ্ধতি।
৫.প্রিন্টেড
ফেব্রিকে লেগে থাকা অতিরিক্ত রং ও থিকেনিং দূর করার জন্য ব্যবহৃত মেশিনারীজ।
থিকেনিং এজেন্টের
প্রয়োজনীয়তা এবং
গুনাগুনঃ-
টেক্সটাইল
প্রিন্টিং এ ব্যবহৃত থিকেনিং এজেন্টের যে সকল গুনাবলি থাকা একান্ত প্রয়োজন তা নিম্নে দেয়া হলোঃ-
১.ড্রাইং
এবং ফিক্সেশনের সময় ব্যবহৃত এজেন্ট এর প্রয়োজনীয় তাপ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা থাকতে হবে।
২.প্রিন্টিং
প্রসেসের সময় যে সকল যান্ত্রিক এবং রাসায়নিক প্রক্রিয়া চলে তাতে প্রিন্টিং পেষ্ট এর কার্যকারিতা প্রভাবিত হতে পারে।
তাই থিকেনিং এজেন্টের ব্যবহার বিধিও অপরিবর্তিত থাকা একান্ত প্রয়োজন।
৩.থিকেনিং
এজেন্ট এর ভিসকসিটি বা আঠালো গুনাবলী সাধারণত ব্যবহৃত রং এর চাকচিক্য, মসৃনতা এবং সূক্ষতা প্রভাবিত করে থাকে।
৪.প্রিন্ট
পেষ্টে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রকারের উপকরনগুলি যাতে পরস্পর কোন ধরনের বিক্রিয়া না করে সেই জন্য থিকেনিং এজেন্ট কাগ করে থাকে।
৫.ফেব্রিক
প্রিন্ট করার সময় ড্রায়িং করার সময় প্রিন্ট পেষ্ট যাতে উঠে না যায় সেই জন্য থিকেনিং এজেন্ট এর ইলাষ্টিক গুনের বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে।
তাই
আমরা বলতে পারি ফেব্রিক
প্রিন্ট
করতে এবং প্রিন্টেড ফেব্রিকের গুনাগুন অটুট রাখতে থিকেনিং এজেন্টের গুরুত্ব অ প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
*রিক্যাপ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত
References:-
1.Textile Printing
By. Fred F. Jacobs2.An Introduction to Textile Printing
By. W. Clarke
3. Textile Printing & Finishing
By. MOHD. SHAHJAHAN FEROZE
1 Comments
good
ReplyDelete