সানফোরাইজিং:-
কটন ফেব্রিককে ওয়াশ
করা হলে এটা নিজ থেকেই সংকুচিত হয়ে যায়।যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কটন ফেব্রিক ব্যবহারের
ক্ষেত্রে বড় সমস্যা।এর কারণ হচ্ছে ফেব্রিকের ফাইবার সমূহ যখন পানির সংস্পর্শে আসে তখন
তা পানি গ্রহণ করে ফুলে ফেপে উঠে। এর ফলে ফাইবার নির্মিত ইয়ার্ন গুলোও ফুলে উঠে। ফলে
উক্ত মোটা ফাইবার ও ইয়ার্ন স্থান সংকুলানের প্রয়োজনে ফেব্রিকটি দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে
হ্রাস পায়।এছাড়া ফেব্রিকের ওয়ার্প ও ওয়েফট ইয়ার্ন এর সংখ্যা প্রতি ইঞ্চিতে সমানুপাতিক
না থাকা ও ফেব্রিকের ত্রুটিপূর্ণ গঠনের কারণেও হ্রাস পাওয়ার মাত্রা বেশি হয়।
কটন ফেব্রিকের এ সংকোচনের
সমস্যা থেকে পরিত্রান পাওয়ার জন্য এটাকে ফিনিসড প্রোডাক্ট হিসেবে বাজারজাত করার পূর্বে
যান্ত্রিক উপায়ে এতটা সংকোচন করা হয় যাতে উহা আর ব্যবহারিক ক্ষেত্রে সংকুচিত হতে না
পারে। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে ফেব্রিক ডাইং, প্রিন্টং করার পূর্বেও এ প্রক্রিয়া করা হয়ে
থাকে। ফেব্রিকে এ ধরণের যান্ত্রিক চাপ প্রয়োগে এন্টি-স্রিঙ্কেজ ফিনিসিং দেয়া হয়। এ
পদ্ধতিকে স্টেনটারিং এর ঠিক উলটো পদ্ধতি হিসেবেও আখ্যায়িত করা যায়।ফেব্রিকে যে উপায়ে
এ ধরণের যান্ত্রিক ফিনিসিং দেয়া হয় তাকে সানফোরাইজিং
বলা হয়। যে মেশিনের সাহায্যে এ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হয় তাকে সানফোরাইজিং মেশিন
বলে। এ পদ্ধতিটি ১৯৩১ সালে সানফোর্ড এলক্লিউট আবিষ্কার করেন।
যে প্রক্রিয়ার সাহায্যে
ফেব্রিককে সংকোচনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য পূর্বেই ফেব্রিককে সমপরিমান সংকোচন করা
হয় তাকে সানফোরাইজিং বলে।
চিত্রঃ সানফোরাইজিং মেশিন (গুগল)
সানফোরাইজিং
এর উদ্দেশ্যাবলীঃ-
নিম্নলিখিত উদ্দেশ্য
সাধনের জন্য ফেব্রিকে সানফোরাইজিং করা হয়।
১। ওয়াসিং এর ফলে ফেব্রিকের
যে সংকোচন হয় তা প্রতিরোধ করা ।
২। ফেব্রিকের লাসচার তথা চাকচিক্যতা
কিছুটা বৃদ্ধি করা।
৩। ফেব্রিকের মসৃনতা বৃদ্ধি করা ।
সানফোরাইজিং
এর প্রয়োজনীয়তা :-
সানফোরাইজিং টেক্সটাইল ফিনিসিং এর একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
এ পদ্ধতি প্রয়োগের দ্বারাফেব্রিককে ওয়াশিং সংকুচিত হওয়া থেকে রোধ করা হয় । ফেব্রিকের সংকুচিত ওয়াইডথকে
অধিকাংশে পুনরুদ্ধার করা যায়। যা কটন ফেব্রিকের
ব্যবহারিক উৎকর্ষতার সৃষ্টি । এর দ্বারা
ফেব্রিকের চাকচিক্যতা তথা উজ্জ্বলতা কিছুটা বৃদ্ধি পায়। ফেব্রিক
পৃষ্টের অমসৃণতা হ্রাস করে
ফেব্রিকের মসৃনতা বৃদ্ধি করে । কখনো কখনো ডাইং , প্রিন্টিং
পারফরমেন্স বৃদ্ধির জন্য ডাইং ,
প্রিন্টিং এর পূর্বেও এ পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়।
সানফোরাইজিং
পদ্ধতিঃ-
ফেব্রিককে ফিড রোলারের সাহায্যে সানফোরাইজিং
রেঞ্জের মধ্যে প্রবেশ করানো হয়। তারপর
ফেব্রিকের উপর পানি স্প্রে করে ভিজানো হয় এবং
কতকগুলো রোলারের মধ্য দিয়ে স্টীম সহযোগে
অতিক্রম করানো হয়। স্টীমিং করার ফলে ফেব্রিক
নরম ও প্লাস্টিক হয় যাতে ফেব্রিক সহজেই
ব্লাংকেট দ্বারা সংকুচিত করা যায়। অতঃপর ফেব্রিককে ৩
ইঞ্চি থেকে ৬ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের ক্লিপ
এক্সপেন্ডার এর মধ্য দিয়ে পাশ করানো হয় যাতে ফেব্রিকের প্রস্থ
নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তারপর ফেব্রিক
ফিড রোলারের উপর দিয়ে ব্লাংকেটের সংস্পর্শে চলে আসে। বিদ্যুৎ
এর সাহায্যে উত্তপ্ত শ্যু দ্বারা এ
ফেব্রিককে পালমির ড্রাইং মেশিনের স্টীম দ্বারা উত্তপ্ত সিলিন্ডার ও ব্লাংকেটের মাঝখান দিয়ে
অতিক্রম করার সময় উহাদের ঘূর্ণণে এবং চাপে সংকুচিত হয় । অতঃপর ফেব্রিককে
অন্য একটি
পালমির ড্রাইং মেশিনের উপর দিয়ে একইভাবে পাশ করানো হয়। যাতে ফেব্রিকের
উভয় পৃষ্ট
ফিনিস হয়। তা ছাড়া প্রথম মেশিনে কাংক্ষিত সংকোচন না হলে দ্বিতীয় মেশিনের সাহায্যে
দেয়া হয়।
এভাবে পালমির সানফোরাইজিং মেশিন দ্বারা ফেব্রিকে সংকোচন দেয়া হয়। ইহা একটি
যান্ত্রিক
ফিনিশিং পদ্ধতি।
*রিক্যাপ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত
0 Comments