Ticker

6/recent/ticker-posts

"১০০তম আর্টিকেলে আমাদের ব্লগ যাত্রা নিয়ে কিছু কথা"

সালটা ২০১৮, মাসটা জানুয়ারি......

আমাদের টিম মেম্বাররা সবাই একই ভার্সিটির ৪র্থ বর্ষের ছাত্র। বিগত তিন বছরের ভার্সিটি জীবনের অর্জিত জ্ঞান নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। দেখা গেল মুখস্ত কিছু নাম ছাড়া কিছুই মনে নেই। এমনকি কতগুলো সাবজেক্ট শেষ হয়েছে সেটাই প্রোপার মনে নেই। আমাদের লেখাপড়া হয়েছে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার ৩-৪ দিন আগে থেকে শীট কালেক্ট করার মাধ্যমে। প্রথম কাজ ছিল সি-আরদের কাছে গিয়ে খবর নেওয়া কোন কোন কলেজ থেকে প্রশ্ন হয়েছে? আমাদের চার কলেজের একসাথে পরীক্ষা হোত এবং প্রশ্ন দুই কলেজ কম্বাইন্ড করে করা হোত। সি-আরদের কাছে ইনফরমেশন পাওয়ার পর শুরু হোত আসল কাজ। শীট ফটোকপি করা। টিউশনিতে যাওয়ার সময় দোকানে শীট ফটোকপি করতে দিতাম আর ফেরত আসার সময় নিয়ে আসতাম। প্রায় ১৩-১৪ কপি একসাথে। মানে ১৩-১৪ জনের পরীক্ষার খোরাক। সারা বছর ক্লাশে কোনরকম হাজিরা দেওয়ার জন্য ঢু মারা হোত। পরীক্ষার ১৮-২০ টা দিন ছিল আমাদের কাছে এক ভয়ংকর বিভীষিকাময় সময়। কবে লাস্ট পরীক্ষাটা হবে আর সারারাত জেগে থাকব সেই অপেক্ষায় থাকতাম।


এই ছিল আমার মত আরও অনেকের ভার্সিটি লাইফ। সে যাইহোক ৪র্থ বর্ষের জানুয়ারি মাসে এই সকল স্মৃতি রোমন্থন করতে করতে ভাবতে লাগলাম আসল সমস্যার কথা। আমাদের লেখাপড়া বা টেকনিক্যাল নলেজ অর্জনের প্রতি অনাগ্রহ তৈরী হওয়ার মূল কারন যদি বলা হয় সেটা হবে না বুঝে মুখস্ত করা। একটি মেশিন নিজে দেখে নিজের ভাষায় যতটা সহজ ভাবে বোঝা বা লেখা যায় সেই মেশিন না দেখে কোনরকম একটা দ্বিমাত্রিক ছবি দেখে অন্য একটা ভাষায় (ইংরেজি) বর্ননা মুখস্ত করে বোঝাটা ততটাই কঠিন। সেই কারনে আমার অভ্যাস ছিল বর্ননা সব ট্রান্সলেট করা। বর্ননাগুলো আমি বাংলা করে শীটের উপরেই লিখে রাখতাম পেন্সিল দিয়ে। পরীক্ষায় সেই বাংলা লেখায় একবার চোখ বুলিয়ে নিতাম। এভাবে দেখলাম ৪র্থ বর্ষে পড়তে অনেকটা কম সময় লাগছে এবং মুখস্ত করার প্রয়োজন পড়ছেনা। শুধুমাত্র এই একটি সমাধানকে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে এবং আমাদের মত আর যেন কেউ কঠিন কঠিন শব্দে ডাইং মেশিন কিংবা নিটিং মেশিনের গঠন মুখস্ত না করে, বুঝে শুনে নিজের মত করে বর্ননা করতে পারে সেই চেষ্টায় আমাদের ব্লগের যাত্রা। শুধুমাত্র মেশিনই নয় বরং টেক্সটাইল এবং আরএমজি সেক্টরের প্রত্যেকটা বিষয় আদ্যপ্রান্ত আলোচনা করা আমাদের ব্লগের ইন্ডেক্সের অন্তর্ভুক্ত। ব্লগটিকে সম্পূর্ণ বাংলা ভাষায় করার এই একমাত্র কারন। সেই জানুয়ারি থেকে আমাদের পোস্টের যাত্রা শুরু। প্রথম পোস্ট ছিল ২৯শে জানুয়ারি ২০১৮ সালে। সেই পোস্টেই আপনাদের বিপুল সাড়া পাই। প্রায় ৪০০০ ভিউ এবং কমেন্টও ছিল কিছু। এরপর আর আমাদের পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি একে একে ১২টি ডিপার্টমেন্টের উপর লেখা হয়েছে ৯৯ টি পোস্ট। যার মধ্যে এপারেল ম্যানুফেকচারিং, ডেনিম ওয়াশিং, ডাইং, ফেব্রিক ম্যানুফেকচারিং, মার্চেন্ডাইজিং, আই ই, ইয়ার্ন ম্যানুফেকচারিং, ফিনিশিং, কোয়ালিটি, প্রিন্টিং ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

আমাদের ব্লগিং এর উদ্দেশ্য আশা করি আপনাদের নিকট পরিষ্কার। এখন খুব ছোট মানুষ হিসাবে আপনাদের জন্য কিছু কথা রয়েছে এই ব্লগিং জগত নিয়ে। যেহেতু সামান্য হলেও এই জগতে অভিজ্ঞতা হয়েছে তাই কিছু বিষয় শেয়ার করার সাহস করছি।
১.যদি আপনি টেক্সটাইল নলেজ সবার কাছে শেয়ার করতে চান তবে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের বিকল্প নেই। এটা ফেসবুক পেজ হতে পারে, ব্লগ সাইট হতে পারে, ওয়েবসাইট হতে পারে।
২. ফেসবুক পেজের চেয়ে একটা সাইট খুব গ্রহনযোগ্যতা পায় সর্বস্তরে। তাই পেজের মাধ্যমে শুরু না করে ফ্রি সাইট যেমন ব্লগস্পট, ওয়ার্ডপ্রেস ইত্যাদিতে নিজের একাউন্ট ওপেন করতে পারেন।
৩. যারা বহির্বিশ্বের মানুষের মধ্যেও আপনার সাইটটি ছড়িয়ে দিতে চান তাদের জন্য পরামর্শ থাকবে আপনার সাইটটি ইংরেজিতে করুন।
৪. একাডেমিক এবং প্র‍্যাক্টিক্যাল জ্ঞানের সমন্বয়ে প্রস্তুত করা আর্টিকেলগুলো আপনার সাইটে শেয়ার করুন।
৫. আর্টিকেল পাবলিশের ক্ষেত্রে নিয়মিত হোন। অর্থাৎ সপ্তাহে একটা কিংবা ৪দিন পরপর একটা এভাবে আর্টিকেল পাবলিশ করুন। কখনও বিশাল গ্যাপ দিবেন না।
৬. প্রত্যেকটা আর্টিকেলে যে রেফারেন্স বা সোর্স ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলো অবশ্যই আর্টিকেলের শেষে সংযুক্ত করুন।
৭. কপি পেস্ট লেখা একেবারেই পরিহার করুন। কারন যে কেউ আপনার কপি পেস্ট করা লেখার সত্যতা যাচাই করতে পারবে অনায়াসে। এতে আপনি একজন অডিয়েন্সের বিশ্বস্ততা হারাবেন।

আরও বিস্তারিত খুঁটিনাটি অনেক বিষয় আছে যা ইন-শা-আল্লাহ আপনাদের চাহিদা অনুসারে পরবর্তীতে শেয়ার করা হবে। কারও কোন প্রশ্ন বা জিজ্ঞাসা থাকলে আমাদেরকে ইমেইল করুন textileblogctec@gmail.com এড্রেসে।


*রিক্যাপ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত

Post a Comment

0 Comments