আজকে আমরা পাট থেকে সোনালী তৈরীর যে মাইলফলক ছিল সেটার শুরু এবং ধুকেধুকে শেষ হতে যাওয়া বর্তমান অবস্থা নিয়ে আলোচনা করব। এটা কয়েক পর্বের হবে ইন-শা-আল্লাহ। মুলত একটি সাক্ষাতকারের লিখিত রুপ এটি।
“আমাদের এই অর্গানাইজেশনটাই ডিজলভ হয়ে যাচ্ছে। এখন সেখানে অর্থায়নটা কিভাবে আসবে, ভবিষ্যতটা কিভাবে আসবে জানি না।”
মোবারক আহমদখান। বিজ্ঞানী, সোনালী ব্যাগ-এর উদ্ভাবক
বাংলাদেশের বিজ্ঞানী ড. মোবারক আহমদ খান সোনালী ব্যাগ এর উদ্ভাবক। পাট থেকে তিনি তৈরি করেছেন পলিথিনের বিকল্প — সোনালী ব্যাগ। যেটি দেখতে পলিথিনের মতো হলেও আসলে পলিথিন নয়, এটি অল্প সময়ের ব্যবধানেই পরিবেশে মিশে যায়। ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও এর অগ্রগতি নানা কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সোনালী ব্যাগের উৎপাদন প্রক্রিয়া, এর পরিবেশে মিশে যাওয়ার প্রক্রিয়া, পরিবেশের উপর এর প্রভাব, এর ব্যবহারিক সমস্যা, বৃহৎ পরিসরে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়ার পথে প্রতিবন্ধকতা নিয়ে তার এই সাক্ষাৎকারটি ‘দৃক পিকচার লাইব্রেরি’ তাদের একটি গবেষণার অংশ হিসেবে গ্রহণ করে। গুরুত্ব বিবেচনায় এটিকে সর্বজনকথার পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল। দীর্ঘ সাক্ষাৎকারটিতে আলাপচারিতার কথ্য ধরনটি হুবহু রাখা হয়েছে।
ড. মোবারক আহমেদ খান ১৯৯০ এর দশক থেকে পাট নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশন (বিজেএমসির) প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা হিসেবে কর্মরত। পাটের পলিথিন ছাড়াও তিনি পাট থেকে জুটিন নামক টিনও তৈরি করেছেন। সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন মাহতাব উদ্দীন আহমেদ।
সোনালী ব্যাগ তৈরিতে কি কি লাগে? এর উৎপাদনের পর্যায়গুলো কি একটু সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করবেন?
ড. মোবারক আহমদ খান: সোনালী ব্যাগটা মূলত উৎপাদিত হয় পাট থেকে। আসলে পাট থেকে কথাটা ঠিক না, পাটের অংশ থাকে, পাটের মূল অংশ হল তিনটা — একটা হল সেলুলোজ যেটা ৭০ পারসেন্ট অন এভারেজ বলছি, কমবেশি হয়, হেমোসেলুলোজ থাকে ২০ পারসেন্ট, আর লিগনিন থাকে ১০ পারসেন্ট। এই তিনটা হল মূল ইনগ্রেডিয়েন্টস। তারপর অন্যান্য ছোটখাটো জিনিস — মাইক্রো অ্যাশ এন্ড আদার প্রোডাক্টস থাকে। কিন্তু আমরা এখান থেকে শুধু সেলুলোজ আর হেমোসেলুলোজটা একবারে নিচ্ছি এটা করার জন্যে। দ্যাট মিনস, আমরা প্রায় ৯০ পারসেন্ট জিনিস পাটের থেকে নিয়ে নিচ্ছি। আর যে ১০ পারসেন্ট যেটা থাকছে — লিগনিন, যেটা একটা ইমপর্টেন্ট বায়ো পলিমার — এটাও কিন্তু খুব দামী বায়ো পলিমার, সেই দামী বায়োপলিমারটাকেও আমরা যখন সোনালী ব্যাগ তৈরি করবো, বাইপ্রোডাক্ট হিসেবে এটাকেও আমরা কালেক্ট করবো এবং আমরা এটাকে কমার্শিয়ালি ভায়াবল করে ফেলবো বাইপ্রোডাক্ট হিসেবে। তখন সোনালী ব্যাগের যে দাম সেটাও এটার সাথে এডজাস্টেবল হয়ে যাবে বলে আমার ধারণা। তো এখানে সেই সেলুলোজটুকু আমরা নিচ্ছি — সেলুলোজ, হেমোসেলুলোজটুকু। তো, সেলুলোজটাকে — যেহেতু আপনারা জানেন আমরা যে শার্ট, কাগজ বা যা দেখছি এটা সবই সেলুলোজ এবং পৃথিবীতে সৃষ্টিকর্তার মূল জিনিস হল প্রোটিন, দ্বিতীয়টা হল সেলুলোজ। যেদিকেই আমরা যাই — গাছপালা — সবকিছুর মধ্যে সেলুলোজ আছে। তো, আমরা সেই সেলুলোজটুকুই এখান থেকে নিয়েছি।
*রিক্যাপ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত
সোর্সঃ-sarbojonkotha
0 Comments