Ticker

6/recent/ticker-posts

"স্বপ্নকে বাস্তবে নেওয়ার গল্প"

টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এ শিক্ষকতায় যোগদান করার পর থেকেই একটি জিনিস খেয়াল করলাম গার্মেন্টস ওয়াশিং এপারেল ইঞ্জিনিয়ারিং এর একটা সাব্জেক্ট হওয়া স্বত্তেও অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই বিষয়ের ল্যাবরেটরির ব্যাপারে উদাসীন।নিটারে যোগদান করেই আমি তৎকালীন অধ্যক্ষকে ব্যাপারটি জানাই এবং এপারেল ওয়াশিং এর একটি ল্যাব প্রতিষ্ঠার জন্য জোর অনুরোধ জানাই।স্যার আমাকে ল্যাব ডিজাইন থেকে শুরু করে মেশিন সাপ্লায়ারদের সাথে যোগাযোগ এবং সকল কাজের প্ল্যানিং করতে বলেন।যাই হোক,পরবর্তীতে আমার ও আমার কলিগদের অনেক চেষ্টার ফলশ্রুতিতে নিটারে ওয়াশিং ল্যাব প্রতিষ্ঠিত হয়। যেই গল্প বিস্তারিত আমার আগের একটি পোস্টে শেয়ার করেছি।আজ আর সেই গল্পে যাব না।

২০১৭ সালে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, জোরারগঞ্জ, চট্টগ্রামে যোগদান করার পরে দেখলাম এখানে ওয়াশিং মেশিন আছে।কিন্তু সেটা গ্যাস বয়লার দিয়ে চলবে।কিন্তু অত্র এলাকায় গ্যাস নেই।সুতরাং সিলিন্ডার গ্যাস দিয়ে চালাতে হবে।সিলিন্ডার গ্যাস দিয়ে বয়লার চালিয়ে ওয়াশিং মেশিনে স্টিম দেয়ার মত কোন টেকনিশিয়ান ও পাওয়া যাচ্ছিল না।অনেক খোজাখুজির পর যা পেলাম তাদের ডিমান্ড অনেক হাই।যা এফোর্ড করা আমাদের সরকারি প্রতিষ্ঠান এর জন্য তখন সম্ভব ছিল না।এদিকে আমি ছাত্র-ছাত্রীদের আশা দিয়ে যাচ্চি হবে একদিন না একদিন আমরা করব ইনশাআল্লাহ। একবার তো পানি গরম করে ওয়াশিং মেশিনে ঢেলে ঢেলে চেষ্টা করলাম।কিন্তু তাপমাত্রা কন্ট্রোল করা যাচ্ছিল না,তাই আকাংখিত ইফেক্ট আসে নি।হতাশ হয়ে গেলাম কারণ সবই আছে স্টিম প্রোডিউস করতে না পারলে ল্যাব করানো যাচ্ছে না,আর এই স্টিম কানেকশন এর জন্য প্রয়োজন বেশ ভালো একটি বাজেট।


চিত্রঃ- অধ্যক্ষ মহোদয়ের সাথে আমরা 

গত বছর থেকেই এই বাজেট বৃদ্ধির জন্য কাজ করছিলাম।মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকতাদের সাথে একটি মিটিং এ ব্যাপারে ওনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করি,সেখানে আমাদের শ্রদ্ধেয় মহাপরিচালক মহোদয় ও ছিলেন।তিনিও ব্যাপারটি খুব গুরুত্ব সহকারে নেন।এবং আমাকে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন।কিভাবে আমরা ল্যাবগুলো সচল রাখতে পারি সেজন্য কত বাজেট প্রয়োজন। এটা একটা বিশাল স্টাডির প্রয়োজন ছিল।কারণ এক এক প্রতিষ্ঠান এর কন্ডিশন এক এক রকম।যাই হোক বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এর শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ও অধ্যক্ষদের সাথে কথা বলি,আলোচনা করি।তাদের থেকে তথ্য উপাত্ত নিয়ে একটি সামারি রিপোর্ট তৈরি করে মহাপরিচালক স্যারকে জানাই।স্যার সাথে সাথেই আমার বন্ধু উপপরিচালক (অর্থ ও বাজেট) মাহফুজ কে ডেকে এব্যাপারে দৃড় পদক্ষেপ নিতে বলেন। মাহফুজ ও ঐ প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে তড়িৎ এবং কার্যকরী একশন নেয়,যার ফলে আমরা পূর্বের তুলনায় কিছু বেশি বাজেট পাই।যদিও তা এখনো প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল,তবুও করোনা পরবর্তী এই পরিস্থিতিতে যেখানে সব বাজেট কমাচ্ছে,সেখানে একাডেমিক কাজে কিছুটা বেড়েছে এটাই আমাদের সফলতা।


চিত্রঃ- ওয়াশকৃত ডেনিম

আমাদের বর্তমান অধ্যক্ষ Ali Azam Rokon স্যার যোগদানের পর থেকেই স্যারকে এ ব্যাপারে জানিয়েছিলাম। স্যার শুরু থেকেই সব ব্যাপারে এত পজিটিভ যে আমাদের বলার আগেই স্যার ভেবে প্ল্যান করে বসে থাকে,তাই খুব আশাবাদী ছিলাম এবার ইনশাল্লাহ কিছু একটা হবে।স্যারকে খুব অনুরোধ করলাম স্যার বাজেট বেশি লাগলেও এবার প্লিজ বয়লার এর ব্যাপারে একটি পদক্ষেপ নিন।স্যার হতাশ করেন নি,স্যার সাহস দিয়েছেন,বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। আলহামদুলিল্লাহ। এরপর আমাদের বয়লার অপারেটর শাহ আলম কে নির্দেশ দেই বয়লার সার্ভিসিং এর টেকনিশিয়ান নিয়ে আসতে,বেশ কয়েকটি টেকনিশিয়ান এর সাথে কথা বলে,প্রাইস কোটেশন নিয়ে পর্যালোচনা করে অবশেষে বয়লার টি ফাংশনাল করা হয় এবং পরিশেষে সুন্দরভাবে ওয়াশিং ল্যাব এ স্টোন ব্লিচ ওয়াশ করা সম্ভব হয়। 


চিত্রঃ- অত্যাধুনিক ল্যাবেরটরি 

অসংখ্যা ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় মহাপরিচালক মহোদয়, ডিডি অর্থ ও বাজেট এবং অবশ্যই সিটেকের অধ্যক্ষ আলী আজম রোকন স্যারকে ছাত্র-ছাত্রীদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্য।আপনাদের হাত ধরেই টেক্সটাইল শিক্ষা এগিয়ে যাবে বহুদূর।

Maniruzzaman Chowdhury
Assistant Professor
Textile Engineering College, Zorargonj, Chittagong
*রিক্যাপ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত

Post a Comment

0 Comments