Ticker

6/recent/ticker-posts

"Skill Matrix (কি, কেন এবং কিভাবে করবেন?"

Skill Matrix:-

গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যবহৃত বহুল প্রচলিত একটি টার্ম। শুধুমাত্র গার্মেন্টস বলা ভুল হবে, প্রায় সকল ধরনের ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রিতে স্কিল ম্যাট্রিক্স ব্যবহৃত হয়। সাধারনত আই.ই ডিপার্টমেন্ট এই ডাটা সংগ্রহ এবং মেইনটেইন করে থাকে। স্কিল ম্যাট্রিক্স বলতে আসলে কী বুঝায়?

স্কিল ম্যাট্রিক্স হল একটি টুল যা কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মী বা দলের দক্ষতা এবং যোগ্যতা যাচাই, ট্র্যাক এবং পরিচালনা করতে ব্যবহৃত হয়। এটির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মীদের দক্ষতা এবং যোগ্যতার একটা চিত্র প্রদর্শিত হয়।

অর্থাৎ, গার্মেন্টস  ফ্যাক্টরিতে ব্যবহৃত স্কিল ম্যাট্রিক্স এক ধরনের ডাটা ব্যাংক যেখানে প্রত্যেক সুইং লাইনে কর্মরত প্রত্যেকটা অপারেটরের স্কিলের তথ্য লিপিবদ্ধ করা হয়। অর্থাৎ কোন ধরনের মেশিন চালাতে পারে, মেশিন চালানোর দক্ষতা কেমন ইত্যাদি।  

 

Objective of Skill Matrix (স্কিল ম্যাট্রিক্সের প্রয়োজনীয়তা):-

  • অপারেটরের দক্ষতা জানা যায়
  • একটা অপারেটর কি কি মেশিন চালাতে পারে জানা যায়
  • একটা ফ্লোরের বা একটা সুইং লাইনের স্কিল গ্যাপ বের করা যায়
  • স্কিল গ্যাপের তথ্য অনুসারে অপারেটরকে প্রশিক্ষনের জন্য নির্বাচন করা যায়
  • লাইনের রিকোয়্যারমেন্ট অনুসারে কোন কোন প্রসেসের অপারেটর দরকার সেটা নির্নয় করা যায়
  • মাল্টি স্কিল অপারেটর সনাক্ত করা


চিত্রঃ-০১ স্কিল ম্যাট্রিক্স ফরমেট


চিত্রে-০১ একটি স্ট্যান্ডার্ড স্কিল ম্যাট্রিক্সের এক্সেল ফরমেট দেখতে পাচ্ছেন। এই স্কিল ম্যাট্রিক্সের বেশ কিছু কলাম রয়েছে। কোন কলামের কাজ কি এবং কিভাবে ডাটা এন্ট্রি দিবেন সেটা নিয়ে আলোচনা করব ইন-শা-আল্লাহ। 


স্কিল ম্যাট্রিক্সের কলাম বিবরনী (কলাম নাম্বার ১ - কলাম নাম্বার ৭ ) চিত্র-০২


চিত্রঃ-০২ স্কিল ম্যাট্রিক্সের কলাম বিবরনী (১)


1. ID Number:-  যে অপারেটরের স্কিল যাচাই করবেন তার আইডি নাম্বার।
2. Name:-  যে অপারেটরের স্কিল যাচাই করবেন তার নাম।
3. & 4. Floor Name & Line Number:- যে অপারেটরের স্কিল যাচাই করবেন সে কোন ফ্লোরে কাজ করছে এবং রিক্রুইটমেন্টের সময় কোন লাইনে এলোকেট করা হয়েছিল সেটা লিপিবদ্ধ করতে হবে।
5. & 6. Date of Join & Date of Assessment:- অপারেটরের জয়েন ডেট এবং যেই তারিখে স্কিল টেস্ট করা হচ্ছে সেই তারিখ। 
7. Physical Allocated Line:- অপারেটর বর্তমানে যে লাইনে কাজ করছে সেই লাইন নাম্বার এখানে উল্লেখ করতে হবে। কলাম ৪ এবং কলাম ৭-এর মধ্যে একটু কনফিউশন তৈরী হচ্ছে। বিষয়টা ক্লিয়ার করা যাক। 

ধরা যাক, একজন অপারেটরকে আজকে রিক্রুইট করা হয়েছে। প্রাথমিক অবস্থায় চাহিদা অনুসারে তাকে একটি নির্দিষ্ট ফ্লোর এবং একটি নির্দিষ্ট লাইনে বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু কিছু সময় পর আইটেমের স্টাইল পরিবর্তন বা অন্য কোন কারনে লাইন পরিবর্তন করা হতেই পারে। তখন সেটাকে আমরা বলছি Physical Allocated Line র্আথাৎ এসেসমেন্টের সময় অপারেটর যে লাইনে কাজ করছে সেই লাইন এবং নিয়োগের সময় বরাদ্দকৃত লাইনকে বলা হচ্ছে Line Number. 


স্কিল ম্যাট্রিক্সের কলাম বিবরনী (কলাম নাম্বার ৮ - কলাম নাম্বার ১৪ ) চিত্র-০৩


চিত্রঃ-০৩ স্কিল ম্যাট্রিক্সের কলাম বিবরনী (২)



8. Process Name:- অপারেটর যে প্রসেসে দক্ষ সে প্রসেসের নাম লিখতে হবে। একজন অপারেটর একাধিক মেশিন এবং একাধিক প্রসেসে দক্ষ হতে পারে সেক্ষেত্রে প্রতিটা প্রসেসের স্কিল টেস্ট করতে হবে।

9. Process Criticality:- অভিজ্ঞতার আলোকে এবং ফ্যাক্টরির কন্ডিশনের উপর ভিত্তি করে প্রসেসটার ক্রিটিকালিটি নির্ধারন করতে হবে। উদাহরনস্বরুপ যদি ফ্যাক্টরিতে আন্ডারগার্মেন্টস আইটেম বেশী চলে তারমানে সাইড জয়েন, গাসেট জয়েনের প্রসেস তুলনামুলকভাবে নরমাল ধরা যাবে। কিন্তু যদি কোন অপারেটর পোলো-শার্টের প্লাকেট জয়েন প্রসেস পারে তবে এটাকে ক্রিটিকাল ধরা যেতে পারে। এই ফর্মেটে ক্রিটিকালিটির তিনটা ক্রাইটেরিয়া ধরা হয়েছে যথাঃ- নরমাল, সেমি-ক্রিটিকাল, ক্রিটিকাল। 

10. Critical Range:-        =COUNTIF(I8:I11,"Critical")

ফর্মুলা দেখেই বুঝতে পারছেন, এই কলামের কাজ হচ্ছে অপারেটর কয়টা ক্রিটিকাল প্রসেস পারে সেই সংখ্যা উল্লেখ করা। কারন ক্রিটিকাল প্রসেসের সংখ্যা আমাদের পরবর্তীতে মাল্টিস্কিল অপারেটর খুঁজে বের করতে সহযোগিতা করবে। 

11. & 12. Product Type & Machine Type:- অপারেটরের যে প্রসেসের স্কিল টেস্ট করা হচ্ছে সেটা কোন প্রোডাক্টের প্রসেস এবং কি ধরনের মেশিন ব্যবহার করে অপারেটর প্রেসসটা সম্পন্ন করছে সেটা কলাম নাম্বার ১১ এবং ১২-তে উল্লেখ করতে হবে। 

13. Process SMV (Min):-  যে প্রসেসের স্কিল টেস্ট করা হচ্ছে সেই প্রসেসের SMV উল্লেখ করতে হবে। এই SMV নিতে হবে অপারেশন বুলেটিন কিংবা BOL (Basic Operation List) থেকে। 

 14. Target/ Hour (Pcs):- এই কলামে প্রসেসের SMV অনুসারে যে টার্গেট আউটপুট আসে সেটা লিপিবদ্ধ করতে হবে। ফর্মুলা হবে 60/SMV 


স্কিল ম্যাট্রিক্সের কলাম বিবরনী (কলাম নাম্বার ১৫- কলাম নাম্বার ১৯ ) চিত্র-০৪


চিত্রঃ-০৪ স্কিল ম্যাট্রিক্সের কলাম বিবরনী (৩)



15. Process Cycle Time (1st,2nd,3rd):-  ১৫ নং-এর তিনটি কলামে প্রসেসের সাইকেল টাইম বসাতে হবে। অর্থাৎ একই প্রসেসের তিনবার সাইকেল টাইম নিয়ে কলাম তিনটি পুরন করতে হবে। 

16. Average (Cycle Time):-  তিনটি সাইকেল টাইমের এভারেজ সাইকেল টাইম লিপিবদ্ধ করতে হবে ১৬ নং কলামে। 

17. Add 15% Allowance:- ১৬নং কলামে প্রাপ্ত এভারেজ সাইকেল টাইমের সাথে ১৫% মেশিন এলাউন্স যোগ করতে হবে।
ফর্মুলা =  Average Cycle Time*15%+Average Cycle Time

18. Capacity Per Hour (Pcs):- এলাউন্স সহ প্রাপ্ত সাইকেল টাইম থেকে অপারেটরের ঐ প্রসেসের ক্যাপাসিটি বের করতে হবে। এখানে সাইকেল টাইম সেকেন্ডে নেওয়া হয়েছে তাই ফর্মুলা হবে,
ফর্মুলা = 3600/Average Cycle Time

19. Process Performance:- সর্বশেষ ১৯ নং কলামে অপারেটরের পারফর্মেন্স বের করতে হবে। বুলেটিন বা বিওলের SMV অনুসারে যে টার্গেট এসেছিল (১৪ নং কলাম দ্রষ্টব্য) সেই টার্গেটকে প্রাপ্ত অপারেটরের ক্যাপাসিটি দ্বারা ভাগ করে অপারেটরের পারফর্মেন্স বের করা যাবে। 

ফর্মুলা = Target Per Hour (Pcs) / Capacity Per Hour (Pcs)



স্কিল ম্যাট্রিক্সের কলাম বিবরনী (কলাম নাম্বার ২০- কলাম নাম্বার ২৪ ) চিত্র-০৫


চিত্রঃ-০৫ স্কিল ম্যাট্রিক্সের কলাম বিবরনী (৪)


20. Machine Grade:- ২০ নং কলামের কাজটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটা বুঝতে পারাটা জরুরী। আগের কলামে (১৯) আমরা প্রত্যেকটা প্রসেসের পারফর্মেন্স বের করেছি। এবার আমরা অপারেটরের পারফর্মেন্সের উপর ভিত্তি করে মেশিনের গ্রেড বের করব। অর্থাৎ অপারেট যে প্রসেসটা যেই মেশিনে করছে সেই মেশিনের বিপরীতে তার দক্ষতা কত। এই দক্ষতার গ্রেডিং অর্থাৎ "A+" বা "A" বা  "A-" বা "B-" ইত্যাদি কিসের উপর ভিত্তি করে হবে সেটা এই কলামে ফর্মুলা অনুসারে চলে আসবে। 

ফর্মুলা =IFERROR(
              IF(AVERAGEIF($L8:$L11, W$4, $U8:$U11) >= 80%, "A+",
              IF(AVERAGEIF($L8:$L11, W$4, $U8:$U11) >= 70%, "A",
              IF(AVERAGEIF($L8:$L11, W$4, $U8:$U11) >= 65%, "A-",
              IF(AVERAGEIF($L8:$L11, W$4, $U8:$U11) >= 60%, "B+",
              IF(AVERAGEIF($L8:$L11, W$4, $U8:$U11) >= 55%, "B",
              IF(AVERAGEIF($L8:$L11, W$4, $U8:$U11) >= 50%, "B-", "")))))),"")

প্রথম কলাম অর্থাৎ OL (ওভার লক) মেশিনের B+ কিভাবে আসল ব্যাখ্যা করি। 

L8:L11 অর্থাৎ মেশিন টাইপের কলাম। এই ফর্মুলা প্রথমে মেশিন টাইপের ভিতরে ওভার লক মেশিন ম্যাচ করবে বা খুঁজে বের করবে কারন W4 বা ২০ নং কলাম রেঞ্জের প্রথম কলাম W4 হচ্ছে OL machine এবং শেষে U8:U11 অর্থাৎ মেশিন পারফর্মেন্সের এভারেজ রিটার্ন করবে। এবং আমরা লক্ষ করলে দেখব U8 থেকে U11-এর এভারেজ আসছে ৬৪% । এই ৬৪% ভেল্যু, ৬০%-এর চেয়ে বড় এবং ৬৫%-এর চেয়ে ছোট যা কিনা "B+" গ্রেডে পড়ছে।

এভাবে একজন অপারেটরের প্রত্যেকটা মেশিনের বিপরীতে গ্রেড বের হবে। এবং ঠিক তার পরবর্তী কলামে (২১) একজন অপারেটরের প্রত্যেকটা মেশিনের এভারেজ পারফর্মেন্স বা গ্রেড বের হবে।    

21. Individual Eff(%):- একজন অপারেটরের প্রত্যেকটা মেশিনের এভারেজ পারফর্মেন্স বা গ্রেড বের হবে। 

22. Multi-Skill Status:- একজন অপারেটর মাল্টিস্কিল হতে হলে তাকে মোট তিনটি শর্ত পুরন করতে হবে।

     ১. কমপক্ষে দুইটি বা তার অধিক সংখ্যক মেশিন চালাতে জানতে হবে
     ২. Individula Eff(%) (কলাম নম্বর ১২) কমপক্ষে ৬০% এর সমান বা এরচেয়ে বেশী হতে হবে। 
     ৩. কমপক্ষে (কলাম নম্বর ৯) একটি ক্রিটিকাল প্রসেস পারতে হবে। 

এই তিনটি শর্ত পূরন হলেই অপারেটরকে মাল্টিস্কিল অপারেটর বলা যাবে।  

23. BasMachine:- অপারেটর যে মেশিনে সবচেয়ে বেশী প্রসেস পারে সেই মেশিনটা হবে অপারেটরের জন্য বেস মেসিন। এটা ম্যানুয়ালি ইনপুট করতে হবে।  

24. Grade:- সবশেষ কলামে অপারেটরের একটি গ্রেড তৈরী হবে। এই গ্রেড তৈরী হবে অপারেটরের Individual Eff (%)-এর উপর ভিত্তি করে। 
ফর্মুলা= IF($AC5="","",
              IF($AC5>=80%,"A+",
              IF($AC5>=70%,"A",
              IF($AC5>=65%,"A-",
              IF($AC5>=60%,"B+",
              IF($AC5>=55%,"B",
              IF($AC5>=50%,"B-","")))))))

ফর্মুলায় দেখতে পাচ্ছেন AC কলামে (কলাম নম্বর ২১) অর্থাৎ অপারেটরের ইনডিভিজুয়াল এফিসিইয়েন্সি(%) যদি ৮০% বা এর বেশী হয় তবে "A+", ভেল্যু যদি ৭০% বা এর বেশী হয় তবে "A" ইত্যাদি পর্যায়ক্রমিকভাবে "B-" পর্যন্ত গ্রেড হতে পারে। 



*লেখক স্বত্ত্বঃ- Mamun Rezwan

*রিক্যাপ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত 

Post a Comment

0 Comments