কটনঃ-
স্পিনিং
এর প্রধান কাঁচা মাল কটন অর্থাৎ তুলা। আমাদের দেশে খুব অল্প পরিমানে তুলা উৎপন্ন হয়। তাই
এই
তুলা বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানী করা হয়। তুলাকে বিভিন্ন ধাপে ভাগ করা হয়ে থাকে। যেমনঃ-
১.সি আইল্যান্ড কটন
২.
ইজিপ্সিয়ান
কটন
৩.
সাউথ আমেরিকান কটন
৪.
আমেরিকান
আপল্যান্ড
কটন
৫.
ইন্ডিয়ান
কটন
৬.
চায়না কটন
এসব কটনের
ম্যাচুরিটি ,লেন্থ, স্ট্রেন্থ ইত্যাদি গুনাবলী একটি অপরটি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হয়।
যেসব দেশে এই তুলাগুলো উৎপাদন করা হয় , সেসব দেশে তুলাগুলো দু’টি পদ্ধতিতে
সংগ্রহ অর্থাৎ পিকিং করা
হয়।
এখানে দুই ধরনের পিকিং পদ্ধতি রয়েছে।
১.
হ্যান্ড পিকিং
২.
ম্যাকানিক্যাল
পিকিং
পিকিং
এর পরবর্তী প্রক্রিয়া হচ্ছে জিনিং। কটন থেকে সিড, বাকল, স্যান্ড, লিফ
ইত্যাদি
দূর করার পদ্ধতি জিনিং নামে পরিচিত। তিন ধরনের জিনিং প্রসেস রয়ছে।
১.
স জিনিং
২.
রোলার জিনিং
৩.
ম্যাকার্থি জিনিং
জিনিং
এর পর কটনগুলোকে বেল আকারে প্রস্তুত করা হয়। এই কটনগুলো বেল আকারে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানী করা হয়। এক একটি বেল এর ওজন ১৭০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
সাধারনত
এই বেল থেকে সুতা তৈরি হয়ে থাকে। কোয়ালিটির উপর ভিত্তি করে ইয়ার্নকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে ।
১।কম্বেড
ইয়ার্ন
২।কার্ডেড
ইয়ার্ন
চিত্রঃ বেল ম্যানেজমেন্ট (গুগল)
কম্বেড
ইয়ার্ন :-
সাধারনত
চিকন এবং লম্বা ফাইবার থেকে কম্বেড ইয়ার্ন তৈরি করা হয়। এই ইয়ার্ন এর কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে । যেমন:
১.কম্বেড
ইয়ার্ন একটি
সফট ইয়ার্ন।
২. এটির
স্ট্রেন্থ, মূল্য এবং সফটনেস সাধারন ইয়ার্নের থেকে বেশি হয়ে থাকে।
৩. এটি
থেকে হাই কোয়ালিটি ফেব্রিক তৈরি করা হয়ে থাকে।
চিত্রঃ কম্বেড ইয়ার্নের ম্যানুফেকচারিং প্রসেস ফ্লো-চার্ট (গুগোল)
কার্ডেড
ইয়ার্নঃ-
সাধারনত
শর্ট স্ট্যাপল,নিম্ন মানের ফাইবার থেকে
কার্ডেড
ইয়ার্ন তৈরি করা হয়ে থাকে। কার্ডেড ইয়ার্ন এর কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে।যেমন
১. কার্ডেড
ইয়ার্ন তৈরি করতে খরচ কম হয়ে থাকে ।
২. এটির
স্ট্রেন্থ
কম্বেড ইয়ার্ন থেকে কম হয়ে থাকে।
৩. নিম্ন
মানের ফেব্রিক তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়।
চিত্রঃ কার্ডেড ইয়ার্নের ম্যানুফেকচারিং প্রসেস ফ্লো-চার্ট (গুগোল)
ব্লো
রুমঃ-
এটি
স্পিনিং প্রক্রিয়ার
প্রথম ধাপ। ব্লো রুমে ইনপুট হিসেবে দেওয়া হয় বেল আর আউটপুট হিসেবে পাওয়া যায় ল্যাপ। ওপেন এবং ক্লিন ফাইবার গুলোকে একটি নির্দিষ্ট প্রস্থের সিটে রুপান্তর করাকে ল্যাপ বলে।
ব্লোরুমের
প্রধান তিনটি কাজ রয়েছে। যথা-ওপেনিং, ক্লিনিং এবং মিক্সিং। সর্বাধুনিক স্পিনিং মিল গুলোতে ব্লো রুমে নিম্নলিখিত মেশিন রয়েছে।
১. ইউনিফ্লক
২. হেভি
পারটিকেল
সেপারেটর
৩. আর্গাস
৪. ইউনিক্লিন
৫. ইউনিমিক্স
৬. ইউনিস্টোর
৭. ভিশন
শিল্ড এবং ম্যাজিক আই
৮. কন্ডেনসার
চিত্রঃ ব্লো রুম (গুগল)
কার্ডিং
সেকশনঃ-
কার্ডিং
মেশিনে ইনপুট হিসাবে ল্যাপ বা কার্ডম্যাট প্রবেশ করানো হয়। এবং আউটপুট
হিসাবে স্লাইভার পাওয়া যায়।
কার্ডিং
মেশিনকে ইয়ার্ন ম্যানুফেকচারিং প্রসেসের ফাউন্ডেশন বলা হয়। এর মুলত
কারন হল, এখানে লুসলি এবং আন-ওরিয়েন্টেড কটন ফাইবার
দেওয়া হয় যেখানে সর্বপ্রথম টেক্সটাইল ফর্ম পাওয়া যায় ,যাকে আমরা
স্লাইভার বলি। স্লাইভার হচ্ছে লুজ, মোটামুটিভাবে প্যারালাল, আনটুইস্টেড ফাইবার যেগুলো কার্ডিং মেশিন থেকে তৈরী করা হয়।
কার্ডিং মেশিনে স্লাইভার তৈরী করা ছাড়াও কিছু কাজ করা হয়ে থাকে। এরমধ্যে
রয়েছে ল্যাপ হতে অপদ্রব্য দূর করা। এছাড়া ল্যাপে অবস্থিত ডার্ট, ট্র্যাস এবং আরও
যে অপদ্রব্য আছে সেগুলো দূর করা।
চিত্রঃ কার্ডিং মেশিন (গুগল)
চিত্রঃ স্লাইভার (গুগল)
ড্র ফ্রেমঃ-
ড্র ফ্রেমে ইনপুট হিসাবে দেওয়া হয় স্লাইভার এবং আউটপুট হিসাবে
পাওয়া যায় ড্রন স্লাইভার। ড্র ফ্রেমের কাজ হচ্ছে ড্রয়িং করা। ড্রয়িং
হচ্ছে এমন একটি অপারেশন যার মাধ্যমে স্লাইভারগুলোকে ব্লেন্ড করা হয়, ডাবল করা হয়, লেভেল করা হয়। ড্র ফ্রেমের
প্রধান দু’টি কাজ হচ্ছে ড্রাফটিং এবং ডাবলিং। ড্রাফটিং
হচ্ছে এমন একটি প্রসেস যার মাধ্যমে স্লাইভারগুলোর লেন্থ পার ইউনিট ওয়াইডথ বৃদ্ধি করা
হয়। ডাবলিং হচ্ছে এমন একটি প্রসেস যার মাধ্যমে দুই বা ততোধিক কার্ডেড
স্লাইভারকে একটি সিংগেল ফর্মে নিয়ে আসা হয়। সাধারনত
ড্র ফ্রেমে ছয়টি স্লাইভারকে একটি স্লাইভারে রুপান্তরিত করা হয়। একে ডাবলিং
বলা হয়ে থাকে।
চিত্রঃ ড্র ফ্রেম মেশিন (গুগল)
ল্যাপ
ফর্মারঃ-
ল্যাপ
ফর্মারে ইনপুট হিসেবে দেওয়া হয় ড্রন স্লাইভার আর আউটপুট হিসেবে পাওয়া যায় ল্যাপ।সাধারণত কম্বেড ইয়ার্ন তৈরি করার ক্ষেত্রে ল্যাপ ফর্মার প্রয়োজন হয়। এর মাধ্যমে আমরা সাধারণত ১৬ থেকে ৩২ টি স্লাইভারকে বিভিন্ন প্রসেসের মাধ্যমে ল্যাপে পরিণত করে থাকি । পরবর্তীতে এই ল্যাপকে ববিনে রাখা হয়।
চিত্রঃ ল্যাপ ফর্মার (গুগল)
কম্বারঃ-
কম্বার মেশিনে ইনপুট হিসেবে দেওয়া হয় ল্যাপ আর আউটপুট হিসেবে পাওয়া যায় কম্বেড স্লাইভার । কম্বার মেশিন দিয়ে সাধারণত কম্বিং করা হয়।এর মাধ্যমে শর্ট ফাইবার যেমন নেপ্স, লিফ ইত্যাদি দূর করা হয় এবং ফাইবারকে আরো বেশি মসৃণ করা হয় এবং ফাইবারকে
স্পিনিং
এর জন্য আরো বেশি উপযোগী করা হয়।
চিত্রঃ কম্বার মেশিন (গুগল)
স্প্রেড
ফ্রেম/রবিন
ফ্রেম /সিমপ্লেক্স
মেশিনঃ-
সিমপ্লেক্স মেশিনে ইনপুট হিসেবে দেওয়া হয় ড্রন স্লাইভার আর আউটপুট হিসেবে পাওয়া যায় রবিন। সিমপ্লেক্স মেশিনের প্রধান কাজ হচ্ছে স্লাইভার গুলোকে ড্রাফটিং করে তাদের মাঝে খুব অল্প পরিমানে টুইষ্ট আনা আর এই অল্প পরিমানের টুইষ্টেড স্লাইভারগূলো হচ্ছে রবিন।পরবর্তীতে এই রবিনকে ববিনে উইন্ড করা হয়।
চিত্রঃ সিমপ্লেক্স মেশিন (গুগল)
রিং
ফ্রেমঃ-
রিং
মেশিনে ইনপুট হিসেবে দেওয়া হয় রবিন আর আউটপুট হিসেবে পাওয়া যায় ইয়ার্ন কপস। রিং ফ্রেম মেশিনে রবিনকে আরো বেশি ড্রাফট করে রবিনের সাইজ কমিয়ে ইয়ার্ন ফর্মে আনা হয়।পরবর্তীতে এই ইয়ার্নের স্ট্রেন্থ বৃদ্ধি করার জন্য একে আরো বেশি টুইষ্ট দেওয়া হয়। এরপর টুইষ্টেড ইয়ার্নকে ববিনে জড়ানো হয় এবং একটি সুবিধাজনক প্যাকেজে রুপান্তর করা হয় ।
চিত্রঃ রিং ফ্রেম মেশিন (গুগল)
উইন্ডিং:-
উইন্ডিং
মেশিনে ইনপুট হিসেবে দেওয়া হয় ইয়ার্ন কপস আর আউটপুট হিসেবে পাওয়া যায় ইয়ার্ন।ইহা স্পিনিং প্রসেসের সর্বশেষ ধাপ। ইহার একমাত্র উদ্দেশ্য ইয়ার্নকে স্পিনিং প্যাকেজ থেকে সুবিধাজনক প্যাকেজে রুপান্তর করা । ইয়ার্নের কোয়ালিটি ও ইফিসিয়েন্সি বৃদ্ধি করে
এবং
ভাল মানের ওয়ার্প ইয়ার্ন পাওয়া যায়। এই ওয়ার্প ইয়ার্নকে পরবর্তীতে স্টোর করে রাখা হয় । পরবর্তীতে এই স্টোরকৃত ইয়ার্ন প্যাকেজকে ওভেন অথবা নিট ফেব্রিক তৈরীতে ব্যবহার করা হয়।
চিত্রঃ উইন্ডিং মেশিন (গুগল)
*রিক্যাপ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত
0 Comments