আমেরিকায় 'অ্যানেকোইক চেম্বার' নামে একটা নীরব রুম আছে। পৃথিবীর সবচেয়ে নীরব রুম।
রুমটা এতোটাই নীরব যে ওখানে একজন মানুষ কিছুক্ষন থাকার পর তার নিজের হার্টবীটের শব্দ শুনতে পায়। এর কিছুক্ষন পর শিরার ভেতর দিয়ে যে রক্তপ্রবাহিত হয় সেটার শব্দও শুনতে পায়।
এই রুমটিতে মানুষ সর্বোচ্চ ৪৫ মিনিট পর্যন্ত থাকতে পেরেছে। বেশিরভাগ মানুষই ১৫-২০ মিনিটের মধ্যে বেরিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে।
নিস্তব্ধতার চিৎকার অনেক ভয়ংকর। নিস্তব্ধতা মানুষকে শেষ করে দেয়। তেমনি নিস্তব্ধ মানুষও অনেক ভয়ংকর। কোন চঞ্চল মানুষ যদি হঠাৎ নিস্তব্ধ হয়ে যায় তাকে ভয় পাওয়া উচিত। ওই মানুষ হয় নিজেকে শেষ করে দেবে নয়তো অন্যকে।
চিত্রঃ- Anechoic chamber (Google)
আমাদের চারদিকে এতো শব্দ দূষণ, এতো হৈ চৈ তারপরও আমরা ঠিকই টিকে আছি। কিন্তু শব্দহীন রুমে মানুষ ৪৫ মিনিটের বেশি টিকতে পারে না। এর বেশি ট্রাই করতে গেলে পাগল হয়ে ফিরতে হবে।
অ্যানেকোইক চেম্বার রুমের শব্দ স্তর হলো-20.35 ডেসিবেল (dB)
মাটির সাড়ে ৩ হাত নিচে এই শব্দের মাত্রা আরো কম, আরো অন্ধকার, আরো ভয়ংকর। অ্যানেকোইক চেম্বার থেকে চাইলেই দৌড়ে বেরিয়ে আসা যায়। কিন্তু সাড়ে ৩ হাতের ওই চেম্বার থেকে বের হওয়ার কোন সুযোগ নেই। যুগের পর যুগ অনন্ত কাল ওই চেম্বারে থাকতে হবে। এই লিখাটি যারা পড়ছেন, এই শতাব্দির কোন এক সময় সবাই যার যার চেম্বারে চলে যাবেন। কোন উপায় নেই, কোন মেডিসিন নেই।
আমরা প্রত্যেকে বড্ড একা। কিছুক্ষনের জন্য এই খেলাঘরে সাময়িক উম্মাদনা। এর মধ্যেই কত হানাহানি মারামারি।
কতজনের কাছে কত দেনা পাওনা বাকী। কত জনের কাছে ক্ষমা চাওয়া বাকী। অনেকের সাথে হয়তো জীবনের শেষ দেখাটি হয়ে গেছে।
ওই চেম্বারে ঢুকে যাওয়ার আগেই মন থেকে সকল ঘৃণা অভিমান দূর করে প্রিয় মানুষগুলোকে আরেকবার জড়িয়ে ধরতে হবে। আরেকবার কাছাকাছি আসতে হবে। পৃথিবীতে থাকতেই আমাদের পরবর্তী চেম্বারকে আলোকিত করার জন্য যা যা করার দরকার করতে হবে।
Written by:- S M Nahidur Rahman
0 Comments